You must need to login..!
Description
স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
রাজধানী ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে সরাসরি ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্ন পূরণ হলো। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৭ মিনিটে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গার উদ্দেশে একটি লম্বা হুইসেল দিয়ে ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়। আর এর মধ্যে দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকা যুক্ত হলো রেলপথে। রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজনসহ সরকারের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা এই ট্রেন যাত্রায় রয়েছেন। পরীক্ষামূলক যাত্রার প্রথম এই ট্রেনটি লোকোমাস্টার হিসেবে এনামুল হক এবং সহকারী লোকোমাস্টার হিসেবে এম এ হোসেন ট্রেন চালাচ্ছেন। আর গার্ড হিসেবে ট্রেন পরিচালনা করছেন আনোয়ার হোসেন।এর আগে পরীক্ষামূলক ট্রেন যাত্রা উপলক্ষ্যে সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর কমলাপুরে রেলওয়ে স্টেশনের ৭ নং প্ল্যাটফর্মে ট্রেনটি এসে পৌঁছায়। এসময় প্ল্যাটফর্মে উপস্থিত সাধারণ যাত্রী ও রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা যায়। সবাই নতুন ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলেন, কেউবা স্মরণীয় এই মুহূর্ত সেলফিতে ফ্রেমবন্দি করছিলেন।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঢাকার কমলাপুর থেকে রওনা হয়ে একটি ট্রেন পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে পৌঁছাবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা রেলস্টেশনে। সেখান থেকে আবার ট্রেনটি ফিরে আসবে ঢাকায়।
ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি নতুন একটি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন), একটি পাওয়ার কার (ডব্লিউপিসি), শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ডাইনিং কার ও গার্ড ব্রেক (ডব্লিউজেডিআর), শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্লিপার কার (ডব্লিউজেসি), ২টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কার (ডব্লিউজেসিসি) এবং একটি শোভন চেয়ার কোচ (ডব্লিউইসি) ক্যারেজ— এই ৭টি ক্যারেজ দিয়ে রেক তৈরি করে ট্রেনটি প্রস্তুত করা হয়েছে।গত বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায় ট্রেনটি।
টেস্ট রানের ট্রেনটিতে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এছাড়া রেলেওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পদ্মার দুই পাড়ের সংসদ সদস্যরাও এই ট্রেনে রয়েছেন।
স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে রেললাইন উদ্বোধনের জন্য আগামী ১০ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করা আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেললাইনের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। উদ্বোধনের দিন সুধী সমাবেশও হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি। তাই উদ্বোধনের আগে বৃহস্পতিবার পরীক্ষামূলকভাবে একটি ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় রেল কর্তৃপক্ষ।
এর আগে, পদ্মা সেতুতে পাথরবিহীন রেললাইন বসানো সম্পন্ন হলে চলতি বছরের ৪ঠা এপ্রিল ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন থেকে পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে মাওয়া রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হয়। এবার পুরো পথে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হলো ট্রেন চলাচল।
আগামী ১০ই অক্টোবর পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলাচল উদ্বোধন করা হলেও পুরো রেল প্রকল্প শেষ হতে অবশ্য আরও দেরি হবে। আপাতত ভাঙ্গা পর্যন্ত রেলপথ চালু হলেও প্রকল্পের আওতায় রেলপথ সংযুক্ত করবে যশোর পর্যন্ত । পুরোটা ২০২৪ সালে জুনে শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, গত আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮২ শতাংশ। এর মধ্যে প্রথম ভাগে ঢাকা-মাওয়া অংশে অগ্রগতি ৮০.৫০ শতাংশ। এই অংশে শতভাগ রেললাইন হয়েছে। তবে চার স্টেশনের কোনোটির কাজই শতভাগ শেষ হয়নি।
দ্বিতীয় ভাগে মাওয়া-ভাঙ্গার কাজের অগ্রগতি ৯৬.৫০ শতাংশ। এই অংশে ব্যালাস্টেড ট্রাক ও সিগন্যালিংয়ের কাজ বাকি। নতুন চার স্টেশনের দুটির নির্মাণ শেষ, দুটি বাকি। আর শেষ ভাগে রয়েছে ভাঙ্গা-যশোর অংশের কাজ, যার অগ্রগতি ৭৮ শতাংশ। এই অংশে রেললাইন নির্মাণ প্রায় শেষ, মাত্র ১ শতাংশ বাকি। তবে ৯টি স্টেশনের কোনোটির কাজই শেষ হয়নি।