সর্বজনীন পেনশন যুগে বাংলাদেশ

image

You must need to login..!

Description

মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান

প্রায় ১৭ কোটি মানুষের এই দেশে সরকারি চাকরিজীবীর সংখ্যা ১৪ লক্ষের মতো। এতদিন পেনশন পেতেন শুধু সরকারি চাকুরীজীবীরা। এবার আওতায় আসলেন অন্যরা। অবশেষে অপেক্ষার প্রহর ফুরিয়ে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাধারণের সুরক্ষায় দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে সর্বজনীন পেনশন। কর্মজীবন শেষে কেউ যেন সমাজের বোঝা না হয় বরং তাদের মুখে হাসি ফোটাতে এ ব্যবস্থা।

বৃদ্ধ বয়সে দেশের সকল মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা বিধান করতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে এ পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে। পেনশন স্কিমের আওতায় এলে কাউকে আর ভাতা বা অন্যের উপর নির্ভর করতে হবে না, চলবে নিজের আয়েই, কমবে সামাজিক বৈষম্য। এতে সুরক্ষিত হবে জীবন, বয়স্ক লোকেরা সুরক্ষা পাবেন তাদের জীবনে। তাদের চিকিৎসা ঔষধপত্র কেনা, জিনিস কেনা অর্থাৎ কারো কাছে হাত পাততে হবে না। প্রবীণ মানুষ সম্পূর্ণ সম্মানের সাথে বাঁচার সুযোগ পাবে। সুযোগগুলো করে দেওয়া এ পেনশন কর্মসূচির লক্ষ্য।

সরকারি চাকরিজীবীর বাইরের জনগোষ্ঠীর জন্য এটা করা হয়েছে, মোটকথা বেসরকারি খাতের জন্য এ কর্মসূচি। এর আওতায় থাকবেন সমাজের সব শ্রেণি পেশার মানুষ। এর সুবিধা পেতে মাসিক চাঁদা দিতে হবে অন্তত ১০ বছর। বর্তমানে দেশে চাকুরী পরবর্তী আর্থিক সুবিধা বা পেনশনের আওতায় সরকারি ও স্বায়ওশাসিত মিলিয়ে প্রায় ২০ লাখ মানুষ যা মোট কর্মক্ষম জনসংখ্যার ৩ শতাংশেরও কম।

বিদ্যমান কাঠামোকে আরো শক্তিশালী এবং এর বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীর আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর ঘোষণা দেয় বর্তমান সরকার। দীর্ঘ সময়ের পর্যালোচনা ও সম্ভাবতা যাচাইয়ের পর অবশেষে আংশিকভাবে চালু হয়েছে ১৭ আগস্ট থেকে। নিয়মানুযায়ী ১৮-৫০ বছর বয়সী যে কেউ সম্পৃক্ত হতে পারবেন এ ব্যবস্থায়। তবে, বিশেষ বিবেচনায় ৫০ বছরের বেশি বয়সের নাগরিকগণ স্কিমে অংশগ্রহণের তারিখ হতে নিরবচ্ছিন্ন ১০ বছর চাঁদা প্রদান শেষে আজীবন পেনশন প্রাপ্য হবেন।

সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন প্রচেষ্টার একটি বহ্নিঃপ্রকাশ এই পেনশন। সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ। প্রায় ১ বছর আগে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার ওপর একটি কৌশলপত্র তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। তারই ধারাবাহিকতায় বেশ কিছুদিন আগেই সরকার সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করার সহায়ক আইন প্রণয়ন করেছে, যার নাম সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন ২০২৩।

আগেই উল্লেখ করেছি, এটা একটা সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী বা জাল, যার মাধ্যমে দেশের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধ-বৃদ্ধা জনগোষ্ঠীকে দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহের জন্য মাসিক ভাতা বা বৃত্তি (স্টাইপেন্ড) দেয়া হবে। সর্বজনীন এ স্কিমগুলোর মাধ্যমে দেশের ৪ শ্রেণির প্রায় সাড়ে ১০ কোটি মানুষ পেনশন সুবিধা পাবেন। প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা নামে ৪টি আলাদা স্কিম চালু করা হয়েছে। এগুলো যথাক্রমে প্রবাসী, বেসরকারি চাকরি, স্বকর্মে নিয়োজিত ও অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মে নিয়োজিত কিংবা আয় উপার্জনবিহীনদের জন্য প্রবর্তিত হয়েছে। আরো ২টি স্কিম পরে সুবিধাজনক সময়ে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এসব স্কিমে চাঁদার কিস্তি পছন্দ অনুযায়ী মাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে পরিশোধ করা যাবে। চাঁদা দেওয়ার সময়ের ভিত্তিতে ৪টি স্কিমের জন্যই মাসিক চাঁদার পরিমাণ এবং পেনশনের পরিমাণ আলাদা আলাদাভাবে নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। কিস্তি নেওয়া হবে ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

প্রবাস স্কিম:

বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী যে কোনো বাংলাদেশী নাগরিক তার অভিপ্রায় অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধের শর্তে নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদানপূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। প্রবাস হতে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর সমপরিমাণ অর্থ দেশীয় মুদ্রায় পরিশোধ করাসহ প্রয়োজনে স্কিম পরিবর্তন করতে পারবেন। পেনশন স্কিমের মেয়াদ পূর্তিতে পেনশনার দেশীয় মুদ্রায় পেনশন প্রাপ্য হবেন। এখানে মাসিক চাঁদার হার ধরা হয়েছে ৫ হাজার, ৭ হাজার ৫০০ এবং ১০ হাজার টাকা। প্রবাসীরা ৫ হাজার, ৭ হাজার ৫০০ এবং ১০ হাজার টাকা মাসিক কিস্তি ১০ বছর ধরে প্রদান করে যথাক্রমে ৭ হাজার ৬৫১, ১১ হাজার ৪৭৭ এবং ১৫ হাজার ৩০২ টাকা মাসিক পেনশন পেতে পারেন। অনুরূপভাবে ১০ হাজার টাকা মাসিক কিস্তি সর্বোচ্চ সময়কাল ৪২ বছর ধরে প্রদান করে ৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ৬৫৫ টাকা সম্ভাব্য মাসিক পেনশন পেতে পারেন।

প্রগতি স্কিম:

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী বা উক্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক চাঁদা প্রদানপূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হতে উহার কর্মচারীগণের জন্য এই স্কিমে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে স্কিমের চাঁদার ৫০% কর্মী এবং বাকি ৫০% প্রতিষ্ঠান প্রদান করবে। কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ না করলেও, উক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো কর্মচারী নিজ উদ্যোগে এককভাবে এ স্কিমে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। এক্ষেত্রে মাসিক কিস্তি ২ হাজার, ৩ হাজার বা ৫ হাজার টাকা প্রদান সাপেক্ষে ১০ বছর কিস্তিতে যথাক্রমে ৩ হাজার ৬০, ৪ হাজার ৫৯১ বা ৭ হাজার ৬৫১ টাকা মাসিক পেনশন পাবেন। সে অনুযায়ী, মাসিক ৫ হাজার টাকা করে ৪২ বছর কিস্তি দিয়ে মাসে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৩২৭ টাকা পেনশন পেতে পারেন।

সুরক্ষা স্কিম:

নির্ধারিত হারে চাঁদা প্রদানপূর্বক অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তি যেমন: কৃষক, রিক্সাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতিসহ সকল অনানুষ্ঠানিক কর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের জন্য এই স্কিম। সুরক্ষা প্যাকেজে মাসিক ১০০০, ২০০০, ৩০০০ ও ৫০০০ টাকা চাঁদা প্রদান করা যাবে এবং সর্বনিম্ন ১০ বছর কিস্তি প্রদান করে একজন অংশগ্রহণকারী ক্রমানুযায়ী মাসিক ১ হাজার ৫৩০, ৩ হাজার ৬০, ৪ হাজার ৫৯১ ও ৭ হাজার ৬৫১ টাকা পেনশন পাবেন। সর্বোচ্চ সম্ভাব্য মাসিক ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৩২৭ টাকা পেনশন পেতে চাইলে প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা করে ৪২ বছর চাঁদা দিতে হবে।

সমতা স্কিম:

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক সময়ে সময়ে প্রকাশিত আয় সীমার ভিত্তিতে দারিদ্র্য সীমার নিম্নে বসবাসকারী স্বল্প আয়ের ব্যক্তিগণ (যাহাদের বর্তমান আয় সীমা বাৎসরিক অনুর্ধ্ব ৬০ (ষাট) হাজার টাকা) চাঁদা প্রদানপূর্বক এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন এবং সমতা স্কিমে কর্তৃপক্ষ বিধি অনুসারে সমপরিমাণ অর্থ জমা করবে। এখানে মাসিক চাঁদার হার ধরা হয়েছে ১০০০টাকা (যার মধ্যে, চাঁদাদাতা ৫০০ টাকা + সরকারি অংশ ৫০০ টাকা)। বলা যায়, উপার্জনভোগী মাসিক প্রিমিয়াম ৫০০ টাকা দিলে তাতে সরকার দেবে ৫০০ টাকা। এতে করে সর্বনিম্ন ১০ বছর কিস্তির পরিপ্রেক্ষিতে মাসিক পেনশন পাওয়া যাবে ১৫৩০ টাকা। সে মোতাবেক, যে কেউ ৪২ বছর ব্যাপী চাঁদা প্রদান করলে সম্ভাব্য মাসিক ৩৪ হাজার ৪৬৫ টাকা পেনশন পেতে পারেন। একমাত্র সমতা স্কিমেই আছে সরকারি ভর্তুকির সুবিধা।

 

সর্বজনীন পেনশন স্কিম রেজিস্ট্রেশন:

সর্বস্তরের নাগরিকদের ব্যবহার উপযোগী করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ কর্তৃক জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য upension নামে একটি প্লার্টফর্ম প্রস্তুত করা হয়েছে। অবসর ভাতা প্রাপ্তির জন্য নিবন্ধন, আবেদন ফরম পূরণসহ যাবতীয় কাজ এই পোর্টালে খুব সহজেই করা যাবে। পর্যায়ক্রমে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার ধাপগুলো:

www.upension.gov.bd ওয়েবসাইট ব্রাউজ > রেজিস্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করে প্যাকেজ/স্কিম নির্বাচন > এনআইডি/জন্ম তারিখ ও মোবাইল নম্বর টাইপ করে ক্যাপচা দিয়ে পরবর্তি পেইজ বাটনে ক্লিক করতে হবে > এনআইডি না থাকলে প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকগণ পাসপোর্ট নম্বর, জন্ম তারিখ ও মোবাইল নম্বর টাইপ করে ক্যাপচা দিয়ে পরবর্তি পেইজ বাটনে ক্লিক করতে হবে > ব্যক্তিগত তথ্য এন্ট্রি করতে হবে- পেশা, বাৎসরিক আয় ও স্থায়ী ঠিকানা > স্কিম তথ্য এন্ট্রি করতে হবে- কিস্তির পরিমাণ ও পরিশোধের ধরন > ব্যাংক তথ্য এন্ট্রি করতে হবে- হিসাব নাম, একাউন্ট নম্বর ও রাউটিং নম্বর > নমিনি তথ্য- নমিনির এনআইডি, সম্পর্ক ও শতাংশ এন্ট্রি করতে হবে > তারপর, সেভ বাটনে ক্লিক করে সম্পূর্ণ ফরমটি দেখতে অথবা ডাউনলোড করতে হবে। অতঃপর সাবমিট বাটনে ক্লিক করে সাবমিট করতে হবে > পেমেন্ট করার জন্য পেমেন্ট বাটনে ক্লিক করতে হবে; পেমেন্ট সিস্টেম সিলেক্ট করে পেমেন্ট করতে হবে > পেমেন্ট সম্পূর্ণ হলে পেমেন্ট স্লিপ ডাউনলোড করতে হবে এবং ইউজার আইডি তৈরি করতে হবে > ইউজার আইডি-এর জন্য ইউজার আইডি ও ৬ ডিজিটের পাসওয়ার্ড দিয়ে ওকে বাটনে ক্লিক করতে হবে > ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড গোপন রাখুন। ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে পরবর্তীতে নমিনি পরিবর্তন, ব্যাংক এ্যাকাউন্ড পরিবর্তন ও পেমেন্ট করতে পারবেন।

আবেদনকারীরা অনলাইনের পাশাপাশি সরাসরি সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় গিয়ে এ স্কিমের নিবন্ধন করতে পারবেন এবং চাঁদাও দিতে পারবেন। সোনালী ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমে ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, সোনালী ব্যাংক একাউন্ট, অন্যান্য অনলাইন ব্যাংকিং একাউন্ট, মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস সমূহ থেকে সরাসরি চাঁদা পরিশোধ করতে পারবেন। পেনশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভুল তথ্য দিয়ে আবেদন করলে আবেদন বাতিল হবে এবং জমাকৃত অর্থ ফেরত যোগ্য হবে না।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা সর্বজনীন পেনশন স্কিমবিধিমালা অনুযায়ী এ কর্মসূচিতে যুক্ত যে কেউ ৬০ বছর বয়সের পর থেকে আজীবন পেনশন সুবিধা পাবেন। স্কিমের আওতাধীন কোনও ব্যক্তি মারা গেলে তার জমাকৃত টাকা এবং পেনশনের অর্থ কে পাবে তা নির্ধারণ করার জন্য পূর্ব থেকেই এক বা একাধিক নমিনিযুক্ত করতে হবে। চাঁদা পরিশোধের পর তিনি মারা গেলে পরবর্তীতে তার নমিনি বা উওরাধিকারী ১৫ বছর পর্যন্ত পেনশন পাবেন। চাঁদাদাতা পেনশনে থাকাকালীন তার বয়স ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করলে নমিনি অবশিষ্ট সময়ের জন্য ( অর্থ্যাৎ ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত) মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন।

৬০ বছরের পর থেকে পেনশনাকে মাসিক পেনশনটাও অনলাইন সিস্টেমে নিজস্ব একাউন্টের বিপরীতে বা মাধ্যমে প্রদান করা হবে। তাতে করে আস্থাহীনতার জায়গা ক্ষীণ। ম্যানুয়ালি সিস্টেম জাতীয় পেনশন স্কিমে না থাকার কারণে নিশ্চিত করে বলা যায়, কোনো হয়রানি থাকছে না। আমাদের দেশের মানুষের সঞ্চয় প্রবণতার হারটা খুবই কম। সঞ্চয় যেটা করি তাও আবার স্বল্পমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদিতে খুবই কম। ১০ বছর, ১৫ বছর, ২০ বছর, ৩০ বছর সঞ্চয় খুব একটা করিনা। সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ, ইন্স্যুারেন্স বা বীমায় বিনিয়োগ, এসব ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি কিস্তি দিতে হয়। এখানেও পেনশনের জন্য নির্ধারিত হারে দীর্ঘমেয়াদে স্কিমে টাকা জমা দিতে হবে। জমা দিয়ে ভোগান্তিতে পড়বো কিনা, টাকাটা ফেরত পাবো কিনা, প্রাথমিকভাবে অনেকের মনস্তাত্ত্বিক বাঁধা কাজ করে। কিন্তু সরকার এ বিষয়গুলো স্পষ্ট ও পরিষ্কার করে দিয়েছে।

জনগণ যে টাকা সঞ্চয় করবে সেই টাকা থেকে একটাও সরকার খরচ করবে না। সরকার ট্রেজারিসহ বিভিন্ন লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করবে। বিনিয়োগ থেকে যে ইন্টারেস্ট আসবে সেটা থেকে বাড়তি মুনাফাটা পাওয়া যাবে অর্থ্যাৎ জনগণের এই পেনশন সুবিধাটা দেওয়া হবে। বিষয়টি পূর্ণ সরকারি ব্যবস্থাপনায় ও নিয়ন্ত্রিত। এটি নিয়ে ভাবার কিছু নেই। এটি সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যেভাবে আছে সেভাবে পাওয়া যাবে। আস্থা সংকট বা দুরভিসন্ধি একেবারেই নেই। আপনি যা প্রিমিয়াম দিচ্ছেন তার চেয়ে অনেক বেশি গুণে হবে পেনশন। প্রিমিয়ামের বাইরে যেটি পাচ্ছেন সেটি সরকারি সহায়তা। এটা মনে রাখতে হবে, আপনি যা অবদান রাখছেন বা জমা দিচ্ছেন তার কয়েক গুণ কিন্তু পাচ্ছেন, কাজেই সরকারের অংশগ্রহণ সেখানে আছে। এ কর্মসূচি একেবারেই বেসরকারি লোকেদের জন্য করা হয়েছে। কল্যাণ রাষ্ট্রের জন্য এটি একটি বড় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। উন্নত বিশ্বের আদলে দেরিতে হলেও তার সূচনা হলো বাংলাদেশেও।

 

সহকারী তথ্য অফিসার
আঞ্চলিক তথ্য অফিস, পিআইডি, ময়মনসিংহ।

প্রধান সম্পাদকঃ
মতিউল আলম

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
মাকসুদা আক্তার