You must need to login..!
Description
স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
শেখ হাসিনাকে বিদায় না করে ঘরে ফিরে যাবে না- বলে মন্তব্য করেছেন ইউনাটেড ল ইয়ার্স ফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক ও আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি বলেন, আইনজীবীরা এক দফা দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। দেশের কৃষক শ্রমিক মেহনতী জনতা ছাত্র-যুবক থেকে শুরু করে আইনজীবীরাও শেখ হাসিনার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। কিন্তু এই অবস্থা চলতে দেওয়া যায় না। অবিলম্বে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করছি। অন্যথায় দেশের আইনজীবী সমাজ শেখ হাসিনাকে বিদায় না করে ঘরে ফিরে যাবে না।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় ময়মনসিংহ বিভাগীয় আইনজীবীদের পদযাত্রা শেষে নগরীর নতুন বাজার হরিকিশোর রায় রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আরও বলেন, ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও শহীদ ইয়াহিয়া হত্যা মামলার আসামি মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলের নেতৃত্বে আমাদের আইনজীবী সমাবেশে আজ হামলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিহত করেছে। আমি ন্যক্কারজনক এই ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং আমাদের আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউনাটেড ল ইয়ার্স ফ্রন্টের আহবায়ক অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে শেখ হাসিনা বন্দি করে রেখেছে। তাঁর মুক্তির জন্য আমরা অনেক আন্দোলন করেছি। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে মেরে ফেলতে চায়। তারই প্রতিবাদে আজকে আইনজীবীদের এই আন্দোলন। এই আন্দোলন বৃথা যাবে না, এই অবৈধ সরকার পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আইনজীবীদের আন্দোলন চলবে।
এর আগে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে বিএনপিপন্থি আইনজীবী সমাবেশে হামলা করা হয়েছে অভিযোগ করে জয়নাল আবেদীন আরও বলেন, হামলা করে আন্দোলন ঠেকানো যাবে না। এই সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। কারণ বর্তমান সরকার অবৈধ ও মাফিয়া সরকার, বিনাভোটের সরকার। আর তাই সারাদেশের আইনজীবীদের নিয়ে আমরা পদযাত্রা করছি। সব স্খানে একই আওয়াজ- দফা এক দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। এই অবস্থায় যত তাড়াতাড়ি এই সরকার পদত্যাগ করবে, এদেশের মানুষ তত বাঁচবে, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বাঁচবে। মানুষ ন্যায় বিচার পাবে, নিত্য পন্যের দাম কমবে, মানুষ শান্তি পাবে। এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে মানুষ ভোট দিতে পারবে না। বিগত কয়েকটি নির্বাচনেও মানুষ ভোট দিতে পারেনি। আর কারণেই বিএনপির ২১ দফা আজ এক দফায় পরিণত হয়েছে। অবিলম্বে সংসদ ভেঙ্গে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্থান্তর করে শেখ হাসিনাকে বিদায় নিতে হবে।
সমাবেশে বেগম খালেদা জিয়াকে আপোষহীন নেত্রী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফখরুদ্দিন মঈনুদ্দিন সরকারের সময়ে বেগম খালেদা জিয়াকে বলা হয়েছিল- আপনি বিদেশ চলে যান। নেত্রী বলেছিলেন- এই দেশই আমার বাড়ী, আমি আর কোথাও যাব না। এবারও বেগম খালেদা জিয়া শর্ত মেনে মুক্তি নেননি। তিনি বলেছেন- আমি মরে গেলে মরব কিন্তু গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সাথে কোন আপোষ নেই।
জানা যায়, সংসদ ভেঙ্গে সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্থান্তর ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে এই আইনজীবী সমাবেশ ও পদযাত্রা করেছে ময়মনসিংহ বিভাগীয় ইউনাটেড ল ইয়ার্স ফ্রন্ট। এই পদযাত্রার নেতৃত্ব দেন সংগঠনের আহবায়ক অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন ও প্রধান সমন্বয়ক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এই আইনজীবী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ময়মনসিংহ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট নূরুল হক।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড ল ইয়ার্স ফ্রন্টের র্শীষ নেতা অ্যডভোকেট আব্দুল জব্বার, রুহুল কদ্দুস কাজল, কামরুল ইসলাম সজল, মোহাম্মদ আলী, ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এম.এ হান্নান খান, আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যডভোকেট রেজাউল করিম চৌধুরী, জেলা আইনজীবী ফোরামের সভাপতি প্রফেসর আব্দুল বারী, সহ-সভাপতি আনোয়ারুল আজিজ টুটুল, সাধারন সম্পাদক মাসুদ তানভীর তান্না, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ উদ্দিন প্রিন্সসহ ময়মনসিংহ বিভাগের প্রায় পাঁচ শতাধিক আইনজীবী।
এর আগে দুপুর ২টায় জেলা আইনজীবী সমিতির ১ নং হল রুমে সমাবেশ শুরু করলে তাদের বাঁধা দেয় আওয়ামীলীগপন্থি আইনজীবী ও ছাত্রলীগ নেতারা। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে।
এ সময় কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দের নেতৃত্বে থানা ও ডিবি পুলিশের সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়। পরে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বৃষ্টি ভেজা হয়েই জেলা জজ আদালতের সামনে দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু করে। এ সময় পদযাত্রাটি নগরীর টাউন হল, জিলা স্কুল মোড় ও নতুন বাজার মোড় ঘুরে হরিকিশোর রায় রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে সমাবেশ করে কর্মসূচি সমাপ্ত করে।###
মতিউল আলম