দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক তা নিশ্চিত করা কঠিন

image

You must need to login..!

Description

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যদি বিগত ২০১৪ এবং ২০১৮ এর মতো দলীয় সরকারের অধীনে হয় তবে নির্বাচন বলতে যা বুঝায়-অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়বে। রাজধানীতে ‘পলিটিক্স ইজ ব্রোকেন: হাউ টু ফিক্স ইট’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউন এবং নরওয়েজিয়ান অ্যাম্বেসি, ঢাকা যৌথভাবে এই সেমিনার আয়োজন করে। আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান বলেন, বাংলাদেশ ৫ দশক অতিক্রম করেছে। এই সময়ে আমরা নানা কিছু দেখেছি। তবে অল্পতে বলতে বলা হলে বলবো যে, বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীন রাষ্ট্র নিয়ে এখনো স্বপ্ন পূরণ হয়নি। সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. এম সাখাওয়াত হোসেন নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, সম্প্রতি ঢাকা-১৭ আসনে নির্বাচন হয়েছে। সেখানে ভোটার উপস্থিতি একেবারেই নগণ্য ছিল। এভাবে নির্বাচন হতে থাকলে ভোটারদের উপস্থিতি আশঙ্কাজনক পর্যায়ে গিয়ে ঠেকবে।

সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন কেবল ভোটের দিনের বিষয় নয়। এটার সঙ্গে বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও যুক্ত। সম্প্রতি আমরা আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কথা শুনছি।নিষেধাজ্ঞার বিভিন্ন তালিকা ঘুরে বেড়াচ্ছে শোনা যায়। এরপরও যদি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না হয়, যেখানে বহু দল এবং প্রধান বড় রাজনৈতিক শক্তি, যাদের সরকার গঠনের ক্ষমতা আছে, তারা অংশ না নেয়, তাহলে সে নির্বাচন স্বীকৃতি পাবে না। এমনটা হলে অন্য রকমের কোনো নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে আমার মনে হয়। তিনি বলেন, একটা বিষয় পরিষ্কার থাকা দরকার নির্বাচনে ভোট দেয়া মানবাধিকারের অংশ। নির্বাচন আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে করতে হবে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনটি আন্তর্জাতিক মানের হলো কিনা, এটা দেখতে হবে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দেশে বর্তমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে তিন পথে এগিয়ে যাওয়া যেতে পারে- সংলাপ, সমঝোতা এবং সমাধান। এ ছাড়া আর কোনো পথ নাই, যা দেশের জন্য এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য ভালো হতে পারে।
ব্রতী’র প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশিদ বলেন, রাজনীতির সংস্কার করতে হবে। এটি এখন ক্ষমতা প্রদর্শন, অর্থের ছড়াছড়িতে এসে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে দলীয় সরকারের অধীনে যেভাবে নির্বাচন হয়ে আসছে তাতে নির্বাচন বলতে যা বুঝায় তার প্রতিফলন হয়নি।

আলোচনা অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত। তিনি বলেন, প্রতি ৫ বছর পরে আমাদের একটি নির্বাচন করতে হবে। এটার জন্য কেবল আগামী নির্বাচনকে ঘিরে শর্ট টার্ম সমাধান না খুঁজে একটি দীর্ঘ মেয়াদি সমাধানের কথা আমরা আলোচনা করতে পারি। বিরোধীদের কাছ থেকে বারবার তাদের প্রস্তাব আহ্বান করা হয়েছে। অতীতে কী হয়েছে, সেদিকে না তাকিয়ে আমাদের সামনের দিকে তাকাতে হবে।

বিএনপি দলীয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সামনে এখন যে সমস্যা হাজির হয়েছে, তা প্রকট হয়েছে ২০১৪ এবং ২০১৮ এর নির্বাচনের পরে। এই সংকট থেকে দেশকে উদ্ধারে ৩১ দফা প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে দীর্ঘ ১৫ বছরে যে অনিয়ম ও অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে এর জন্য ৩১ দফার ভিত্তিতে সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) মনোনীত বরিশাল সিটি করপোরেশনে মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, রাজনীতি ভেঙে পড়েনি। এখানে এখন গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এটাকে এখন আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যায় না। এটা এখন একনায়কতান্ত্রিক দেশে পরিণত হয়েছে।
এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বায়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনের প্রধান সম্পাদক জাফর সোবহান।

প্রধান সম্পাদকঃ
মতিউল আলম

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
মাকসুদা আক্তার