গফরগাঁওয়ে চাঞ্চল্যকর ১৬ লাখ ডাকাতির রহস্য উদ্ঘাটন, ৩ ডাকাত গ্রেফতার, প্রাইভেটকারসহ পৌণে ৫ লাখ টাকা উদ্ধার

image

You must need to login..!

Description

মতিউল আলম, বিএমটিভি নিউজঃ  
প্রকাশ্য দিবালোকে গফরগাঁওয়ের চাঞ্চল্যকর ডাকাতির রহস্য উদ্ঘাটন, ৩ ডাকাত গ্রেফতার, প্রাইভেটকারসহ ৪লাখ ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা শাখা ( ডিবি ) পুলিশ। আজ শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঁঞা, পিপিএম এক প্রেস ব্রিপিংয়ে এ তথ্য জানান। এসময় পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরো বলেন, ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইলের দেওয়ানগঞ্জ বাজারের এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন গত ৮ অক্টোব ‘২৩ দুপুরে ইসলামী ব্যাংকের ভালুকা শাখা হতে ব্যবসা পরিচালনার জন্য নিজের একাউন্ট থেকে ১৬ লাখ (ষোল লক্ষ) টাকা উত্তোলন করে ৫ জন যাত্রীসহ ভাড়ায় চালিত সিএনজিযোগে গফরগাঁও থানার এশিয়ান হাইওয়ের টানপাড়া এলাকায় পৌঁছালে একটি সাদা প্রাইভেটকার সিএনজিটির গতিরোধ করে এবং ৩ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে তাকে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে জোরপূর্বক প্রাইভেটকারে উঠিয়ে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ১৬ লাখ (ষোল লক্ষ) টাকা ও সাদ্দাম হোসেন এর ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন ডাকাতি করে। পরবর্তীতে ডাকাতরা সাদ্দাম হোসেনের হাত ও চোখ বেঁধে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার ভান্নারা বাজারে রাস্তার পাশে ফেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় গফরগাঁও থানায় মামলা (মামলা নং-০৭, তারিখ-১০/১০/২০২৩ ইং ধারা-১৭০/৩৯৪/৩৪ পেনাল কোড) রুজু হয়।

ডিবির ওসি ফারুক হোসেন জানান, ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঁঞা, পিপিএম দিকনির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে একটি চৌকষ টিম ডাকাতির রহস্য উদ্ঘাটনে ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ১৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ রাত ২টায় ডাকাতদলের অন্যতম সদস্য আনোয়ার হোসেন (৩৯), পিতা-মোঃ মোস্তফা মোল্লা, ঠিকানা-কোনাবাড়ী, উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ-কে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের সদর থানার লক্ষীপুরা তালুকদার পুকুরপাড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এরপর রাত প্ঢারায় ৫টায় জেলার সাভার থেকে ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী লিটন কাজী@দেলোয়ার কাজী (৪০), পিতা-মোঃ মোতালেব কাজী, ঠিকানা-ঠাকুর নওয়াপাড়া, বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী ও সহযোগী রুবেল মিয়া (৩২), পিতা-মোঃ আজাদ মিয়া, ঠিকানা-গোপালগঞ্জ সদর, গোপালগঞ্জ-দ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়।

ধৃত ১ নং আসামী মোঃ আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৮০ হাজার টাকা, ২ নং আসামী লিটন কাজী@ দেলোয়ার কাজীর কাছ থেকে লুণ্ঠিত ২লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার এবং ৩ নং আসামী মোঃ রুবেল মিয়ার কাছ থেকে লুণ্ঠিত ১ লাখ ৪০ হাজার -টাকাসহ সর্বমোট ৪লাখ ৭০, হাজার (চার লক্ষ সত্তর হাজার) টাকা উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।

আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গত ৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ সকাল ৯.টায় গাজীপুর চৌরাস্তায় ডাকাতির মূলহোতা আসামী লিটন কাজী অপর আসামী মোঃ আনোয়ার হোসেন ও মোঃ রুবেল মিয়াসহ পলাতক ৫/৬ আসামী একত্রে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। তারা তিন ভাগে ভাগ হয়, ৫ জন প্রাইভেটকারে, ৩ জন মোটর সাইকেলে ও বাকী ২ জন ডাকাত লোকাল বাসে দুপুর সাড়ে ১২ টায় নাগাদ ইসলামী ব্যাংক পিএলসি’র ভালুকা শাখায় পৌঁছায়। পলাতক আসামীদের মধ্যে একজন ভিকটিম সাদ্দাম হোসেনকে নজরে রাখে। কিছুক্ষণ পর সাদ্দাম হোসেন টাকা নিয়ে অন্যান্য যাত্রীদের সাথে একটি ভাড়ায় চালিত সিএনজিতে গফরগাঁওয়ের দিকে রওনা করলে ডাকাতরা মোটর সাইকেল ও প্রাইভেটকারযোগে সিএনজিকে অনুসরণ করতে থাকে এবং শান্তিগঞ্জ নামক নির্জন সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছালে ডাকাতরা ডিবি পরিচয়ে সাদ্দাম হোসেনকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে ও চোখ বেঁধে প্রাইভেটকারে উঠায়, টাকা ও মোবাইল ফোন ডাকাতি করে এবং পরবর্তীতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানাধীন ভান্নারা বাজারে রাস্তার পাশে ফেলে দ্রুত চলে যায়।

উল্লেখ্যে যে, ডাকাতির মূলহোতা আসামী লিটন কাজীর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ১০টিরও অধিক ডাকাতিসহ দস্যুতা ও মাদক মামলা এবং আসামী মোঃ রুবেল মিয়ার বিরুদ্ধে ২টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামীসহ পলাতক আসামীরা ভালুকা থানার জামিরদিয়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে র‌্যাবের পোষাক পরিধান করে প্রাইভেটকারে জনৈক মোহাঃ শুভান আলী শুভকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ৭ লাখ ,৪০ হাজার টাকা, ০১ টি মোবাইল এবং ভালুকা থানার হবিরবাড়ী সীডষ্টোর বাদশা গ্রুপের কামাল ইয়ার্ণ লিমিটেড এর সামনে প্রাইভেটকারযোগে র‌্যাব পরিচয় দিয়ে জনৈক কানাই চন্দ্র বর্মনকে গতিরোধ করে ৫ লাখ -টাকা ডাকাতি করেছিল যা সমগ্র এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল।

আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া এবং জড়িত অপর আসামীদের গ্রেফতার ও লুন্ঠিত টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যহত আছে।###

মতিউল আলম,

প্রধান সম্পাদকঃ
মতিউল আলম

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
মাকসুদা আক্তার