নিরুপায় কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের দোকানপাট দখল করে প্রভাবশালীদের ‘হরিলুট’

image

You must need to login..!

Description

নান্দাইল (ময়মনসিংহ)  প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের জায়গায় নির্মিত দোকানপাট দখলের মাধ্যমে প্রতিমাসে লাখ টাকা ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। স্কুল কর্তৃপক্ষকে নামমাত্র কিছু টাকা দিয়ে বাকি টাকা নিজেরাই আত্মসাৎ করছে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী ও স্কুলের একাধিক সূত্র। প্রভাবশালীদের তোপের মুখে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। তবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুতই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

এলাকাবাসী ও স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, নান্দাইল উপজেলার বাকচান্দা আব্দুস সামাদ একাডেমির নিজস্ব জমিতে নির্মিত ২৬টি দোকান দখল করে দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবসা পরিচালনার পাশাপাশি ভাড়া আদায় করছে এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি । আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাব-প্রতিপত্তির মুখে স্কুল কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয়রা মুখ খুলতে না পারায় বছরে অন্তত ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার তহবিল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্কুলটি।

ভয়ে নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক এনিয়ে অভিযোগ জানালেও প্রভাবশালী মহলের মামলা-হামলার ভয়ে কেউই মুখফুটে কিছু বলতে পারে না। এর আগে কয়েকজন কথা বলতে চাইলেও স্থানীয় ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের মাধ্যমে এলাকা ছাড়ার হুমকি থেকে শুরু করে দুনিয়া ছাড়া করার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তাদের।

সরেজমিনে স্থানীয় এলাকাবাসী ও স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নান্দাইলের সীমান্তবর্তী এলাকা সিংরইল ইউনিয়নের নারায়ণপুর মৌজায় ৮ একর জায়গায় ১৯৬৯ সালে স্থাপিত হয় বাকচান্দা আব্দুস সামাদ একাডেমি। একটি প্রভাবশালী মহল স্কুলের নিজস্ব জমিতে ১৯৮৫ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ছোট-বড় ২৬টি দোকান নির্মাণ করে। স্কুলের তহবিলে দোকানগুলো নামমাত্র ৫০-১০০ টাকা ভাড়া দিয়ে প্রভাবশালী মহলটি প্রতি দোকান থেকে ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া আদায় করছে। আর এতে বছরে লাখ লাখ টাকা স্কুল তহবিলে না এসে চলে যাচ্ছে প্রভাবশালীদের পকেটে।

স্কুলটির একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, শুধু স্কুলের আশেপাশেই নয়, পার্শ্ববর্তী হোসেনপুর উপজেলার এক প্রভাবশালী দীর্ঘদিন ধরে স্কুল মাঠে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণ করে সেখানে অনৈতিক নানা ধরনের কর্মকাণ্ডও পরিচালিত করছে, যার তথ্য প্রমাণ অসংখ্য শিক্ষার্থীর হাতে রয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের দাবি। এসব নিয়ে শিক্ষার্থীরা বারবার স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনকে অভিযোগ জানালেও কোন আইনগত ব্যবস্থা না পেয়ে অবশেষে গত ২৭ অক্টোবর একদল শিক্ষার্থী সেই অবৈধ দোকানটি ভেঙে দেয়। এ ঘটনায় বিভিন্ন সময়ে বহিরাগত লোকজন এসে স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ করছে বলেও অভিযোগ তাদের।
স্থানীয় সহিদ মিয়া নামে একজন জানান, প্রতিষ্ঠানটি বাকচান্দা বাজার সংলগ্ন হওয়া এখানে দোকান ভাড়া অনেক বেশি। তিন চার লক্ষ টাকা জামানত দিয়েও দোকান পাওয়া যায় না।
এবিষয়ে বাকচান্দা আব্দুস সামাদ অ্যাকাডেমির প্রধান শিক্ষক সুলতান আহমদ বলেন, আমি ২০১২ সাল থেকে এখানে আছি। অনেক বার চেষ্টা করছি নতুন করে স্কুলের পক্ষ থেকে স্থাপনা নির্মাণ করে বা সময় অনুযায়ী দোকান ভাড়া নির্ধারিত করার, কিন্তু অজ্ঞাত কিছু কারণে করতে পারিনি। প্রধান শিক্ষক স্কুলমাঠে দোকান নির্মাণ বিষয়ে সহকারী কমিশনার ( ভূমি) অফিসে জানিয়েছেন বলে জানান । কিন্তু উনি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া ছাত্ররা একটি দোকান ভেঙ্গেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুণ কৃষ্ণ পাল জানান, বাকচান্দা আব্দুস সামাদ একাডেমি’র কর্তৃপক্ষ আমাকে জানিয়েছে, দ্রুত তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।###

প্রধান সম্পাদকঃ
মতিউল আলম

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ
মাকসুদা আক্তার