২৪ ঘন্টার মধ্যে ময়মনসিংহ নগরীর নওমহলে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন; হত্যাকারী গ্রেফতার

image

You must need to login..!

Description

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
মজুরীর পাওনা ১৮ হাজার টাকার জন্য রড দিয়ে আঘাত করে নির্মাণ শ্রমিকদের ফোরম্যান রমজান আলী হত্যার ২৪ ঘন্টার মধ্যে জেলা ডিবি ও কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ ময়মনসিংহ নগরীর নওমহলে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে। সেই সাথে হত্যাকারী আসামী আমিনুল ইসলাম (২৫) কে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা লোহার রড জব্দ করা হয়েছে। আজ শনিবার বিকালে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এ থথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম মোহাইমেন রশিদ। এসময় ডিবির ওসি সহিদুল ইসলাম ও কোতোয়ালী থানার ওসি শফিকুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

লিথিত বক্তব্যে তিনি জানান, গত ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার ২টায় কোতোয়ালী থানার নওমহল এলাকার সারদা ঘোষ রোডস্থ নির্মাণাধীন ভবন টাওয়ার বিল্ডিং নং-৪৩-এর ৩য় তলায় একজন যুবকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে কোতোয়ালী থানার ৩নং ফাঁড়ির ইনচার্জ, কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ ও জেলার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ভবনের নির্মাণ শ্রমিকদের ফোরম্যান রমজান আলী (২৪) তার নিজ শয়নকক্ষে মৃতদেহ পাওয়া যায় । সে নীলফামারী জেলার জলঢাকা থানার কাশিনাথপুর, পূর্ব বরগ্রামের রশিদুল ইসলাম পুত্র । পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে, তার মাথায় ভারী ভোতা বস্তু দ্বারা উপর্যুপরি আঘাতে তার মুখমন্ডল ও মস্তকের ডান অংশ পুরোপুরি বিকৃত অবস্থায় রয়েছে। ঘটনাটি তৎক্ষণাৎ সমগ্র ময়মনসিংহ শহরে ব্যপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।

ভবনের অপরাপর নির্মাণ শ্রমিকদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ফোরম্যান হিসেবে দায়িত্বপালনকালে মৃত রমজান আলীর কাছে কতিপয় নির্মাণ শ্রমিকের ১৮ হাজার টাকা মজুরী পাওনা ছিল। সেই আলোকে ঘটনাস্থল থেকে জব্দকৃত ভিকটিমের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে এবং ভবনের প্রবেশপথে স্থাপিত একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে নির্মাণাধীন ভবনে রডমিস্ত্রি হিসেবে কর্মরত মোঃ আমিনুর ইসলাম (২৫)-কে সন্দিগ্ধ হিসেবে সনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ডিবির অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে ও কোতোয়ালী থানার একটি যৌথ অভিযান চালিয়ে ৭ ডিসেম্বর সকাল ৭ টায় এই নারকীয় হত্যাকারী আমিনুর ইসলামকে নরসিংদী জেলার সদর থানার শাহ প্রতাপ মোড় এলাকার একটি ছাত্রাবাস থেকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী আমিনুর জানায় যে, গত অক্টোবর মাসে সে রংপুর থেকে ময়মনসিংহে এসে উক্ত ভবনে রডমিস্ত্রি হিসেবে কাজ শুরু করে। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করার জন্য তার শ্বশুর ও চাচা শ্বশুরকে সে সাথে নিয়ে আসে। প্রথম দুই সপ্তাহ তাদেরকে নিয়মিত পারিশ্রমিক প্রদান করা হলেও বিগত প্রায় দেড়মাস যাবৎ তারা নিয়মিত পারিশ্রমিক পেত না। একপর্যায়ে তার শ্বশুর ও চাচা শ্বশুর পারিশ্রমিক না নিয়েই গ্রামের বাড়ি ফিরে যায় এবং গ্রামের আত্মীয় স্বজনের কাছে আমিনুরের সম্মানহানি হয়।
গতকাল শুক্রবার অনুমান সোয়া ১২টায় মৃত রমজানের সাথে আমিনুরের তীব্র বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে রমজান তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করলে আমিনুর উত্তেজিত হয়ে মেঝেতে পড়ে থাকা ভারী লোহার রড দ্বারা রমজানের মাথায় স্বজোরে উপর্যুপরি আঘাত করে। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর সে দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পলায়ন করে প্রথমে ঢাকা এরপর নারায়ণগঞ্জ এবং অবশেষে নরসিংদী গমন করে। সে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।##

মতিউল আলম