মোঃ রফিকুল ইসলাম খোকন নান্দাইল (ময়মনসিংহ)
প্রতিনিধিঃ ধর্ষকের বিচারের আকুতি নিয়েই অবশেষে মারা গেলো ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের নারায়াণপুর গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে পাপিয়া।বাকচান্দা আব্দুস সামাদ একাডেমির দশম শ্রেণীর ছাত্রী পাপিয়া আক্তার (১৫)। ১৬ ডিসেম্বর সোমবার সকালে নিজ বাড়িতে মারা যায় অর্থনৈতিক সংকটে এক রকম চিকিৎসার অভাবে। পাপিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ফরিদ আহমেদ। হোসাইনের হাতে দীর্ঘ তিন মাস বন্দী পাপিয়া ধর্ষকের নির্যাতনে প্রথমে তাঁর ডান চোখ হারায় । অর্থাভাবে চিকিৎসার অভাবে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানতে হল। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় যেমন শোকের ছায়া নেমে এসেছে তেমনি উত্তেজনা বিরাজ করছে। মা-বাবার কাছে ফ্রিজে রাখা পাপিয়ার হারানো চোখের কর্ণিয়া এখন মেয়ের একমাত্র স্মৃতি। পাপিয়ার পারিবারিক সূত্র ও এলাকাবাসী জানায়,ধর্ষক হোসাইন (১৯) উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের কুচুরী চরপাড়া গ্রামের হানিফ মিয়ার পুত্র এবং বাকচান্দা আব্দুস সামাদ একাডেমীর দশম শ্রেণির ছাত্র। হোসাইন ওই ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব সহ বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করত। এক পর্যায়ে গত ১লা জুন/২৪ইং প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় ছাত্রীটিকে দলবলসহ অপহরণ করে নিয়ে যায় হোসাইন। দেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে থানায় গিয়ে কোনো ধরনের আইনি সহায়তা পায়নি পাপিয়ার পরিবার । এমনকি তাদের মেয়ের সন্ধানও পায়নি তারা। পরবর্তীতে ৩ মাস পর ৬ সেপ্টেম্বর রাতে অপহৃত ছাত্রী পাপিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় বাড়ির পাশে নান্দাইল-হোসেনপুর সড়কে ফেলে রেখে যায়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকার আগারগাঁও চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হলে বাম চোখ বাঁচাতে আঘাতপ্রাপ্ত ডান চোখটি উঠিয়ে ফেলা হয়। চোখের কর্নিয়াটি বর্তমানে নিহতের বাড়ির ফ্রিজে সংরক্ষিত আছে। এ বিষয়ে নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে ময়মনসিংহ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে নালিসি (সি আর) মামলা দায়ের করা হলেও এ পর্যন্ত অভিযুক্ত অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়নি বা মামলাটির প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। নান্দাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ফরিদ আহমেদ বলেন, আমরা মৃত্যু খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করছি।###