স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
ময়মনসিংহ নগরীর গোহাইলকান্দি থেকে মোবাইল সীম তৈরি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মানুষের আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে মৃত ব্যক্তিদের নামে মোবাইল সীম রেজিষ্ট্রেশন ও ব্যবহার করে অন্যত্র বিক্রি ও প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় এই প্রতারক চক্র।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ শুক্রবার রাতে নগরীর গোহাইলকান্দি থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইলের সীম তৈরির ফিঙ্গার হিটার মেশিন ও বায়োমেট্রিক স্ক্যানার, তিন শতাধিক নকল সীম উদ্ধার করে। কোতোয়ালি থানা পুলিশ শনিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোঃ সফিকুল ইসলাম খান জানান, শুক্রবার মধ্যরাতে (২০মার্চ) গোপন সংবাদে জানতে পায় প্রতারক ব্যক্তিরা গোহাইলকান্দি এলাকায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মানুষের আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে মোবাইল সীম রেজিষ্ট্রেশন কারী প্রতারক চক্রটি অবস্থান করছে।
কোতোয়ালি পুলিশের একটি টিম শুক্রবার মধ্যরাতে গোহাইলকান্দি তিনকোনা পুকুরপাড়ে অভিযান চালায়। অভিযানে হাফিজুল ইসলাম প্রিন্সকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত প্রিন্সের স্বীকারোক্তি মতে রাতেই প্রিন্সকে সাথে নিয়ে ইটাখোলা থেকে আজিজুল হক ও তানভীর রহমান কাব্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদেরকে সাথে নিয়ে শুক্রবার দিনভর টানা অভিযান চালিয়ে গোহালকান্দির একটি বাসা থেকে মোবাইলের সীম তৈরি, ফিঙ্গার হিটার মেশিন, বায়োমেট্রিক স্ক্যানার, তিন শতাধিক নকল সীম উদ্ধার করে। নগরের গোহাইলকান্দি এলাকার তৃতীয় তলা ভবনের একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে তাঁদের এই কার্যক্রম পরিচালনা করত।
উদ্ধারকৃত আলামতের মধ্যে রয়েছে, ল্যাপটপ তিনটি, সাতটি মোবাইল, ফিঙ্গার হিটার মেশিন তিনটি, ফিঙ্গার বায়োমেট্রিক স্ক্যানার, বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার স্ক্যানার আটটি,
ফিঙ্গার ছাপা যুক্ত নেগেটিভ ৩০ পিস, ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবহার করার রাবার, গ্রামীন সীম ৩০০ পিস, সাদা কাগজে প্রিন্ট করা বিভিন্ন ব্যক্তির এনআইডি নাম্বার সহ তালিকা, একটি মোবাইল ট্যাব।
গ্রেফতার প্রতারক হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের কাছে অনলাইনের মাধ্যমে সিম দিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম খুলে ওটিপি চালু করে দেওয়ার জন্য অর্ডার আসত। অনলাইনের বিভিন্ন পেজের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে সে অনুযায়ী কাজ করে প্রতারনার সুযোগ নিতেন।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে অজ্ঞাত আরও পাঁচ জনকে আসামী করা হয়েছে।। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক সাজেদ কামাল প্রতারকচক্রের অন্যান্য সদস্যদের সনাক্তকরণ ও জড়িতদের তথ্য সংগ্রহে জিজ্ঞাসাবাদে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আসামিদের আদালতে পাঠিয়েছেন।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, এটা একটি অনেক বড় চক্র ‘পুরো চক্রটিকে ধরতে আমাদের তৎপরতা শুরু হয়েছে। গ্রেপ্তার তিনজনের ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। রিমান্ডে আনার পর আরও তথ্য বেরিয়ে আসবে।