মাদকের আধিপত্য নিয়ে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা, মামলার আসামী ৮২

image

You must need to login..!

Description

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় মাদকের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কৃষকলীগের সভাপতি শালিসে না যাওয়ায় বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম বাদী হয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও ৬০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলা আ:লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: তোফাজ্জল হোসেন তোপা’র আস্থাভাজন হওয়ায় নাওগাঁও ইউনিয়নের ওয়ার্ড কৃষকলীগের সভাপতি আবদুল গফুর (৫০) আ:লীগ সরকারের আমলে এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তার করে মাদক ব্যবসা করতেন। ঐ সময় ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন মাদক বিক্রি, চুরি ছিনতাইয়ে বাধা দিলে তাকে হত্যার হুমকিও দিয়েছিল। দেশের ক্ষমতার পরিবর্তন হলেও তার কোন পরিবর্তন আসেনি, পূর্বের প্রভাব দেখিয়ে এখনো মাদক বিক্রি, চুরি ছিনতাই অবাধে করে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে থানায় চুরি ছিনতাই চাঁদাবাজির তিনটি ও ছেলে বিরুদ্ধে একটি মাদক মামালা আছে। এর প্রতিকারে সম্প্রতি তিনি ও তাঁর ছেলে মেহেদী হাসান (১৫) বিরুদ্ধে মাছ ও মোবাইল চুরির ঘটনায় স্থানীয়রা শালিস ডাকেন। ঘটনার দিন শালিসে বসে বাবা ছেলেকে ডাকেন শালিসকারী। কিন্তু বাবা ছেলে শালিসে না এসে ঘরে রাম-দা নিয়ে বসে থাকে।

শালিসকারীরা তাদের বাড়িতে ডাকতে গেলে রাম-দা হাতে নিয়ে বাবা ছেলে তাদের ধাওয়া করে। পরে শালিসকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বাবা ছেলের হাত থেকে রাম-দা কেড়ে নিয়ে তাদের কুপিয়ে হত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে গত রবিবার সকালে মযনাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এই ঘটনায় জড়িত তিনজনকে ওই দিন রাতেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলেন, পলাশীহাটা গ্রামের মো. রিপন (৩২), নাওগাঁও গ্রামের মো. মোজাম্মেল হক (৬৫) ও এক কিশোর (১৩)। নিহত আব্দুল গফুরের স্ত্রীর করা মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত রবিবার দুপুরে ময়মনসিংহ আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ।

নিহতের স্ত্রী শিল্পী বেগম বলেন, মেহেদী আমার স্বামীর প্রথম পক্ষের ছেলে। সে একটু বখাটেপনা করত। চার-পাঁচ দিন আগে আবদুল মোতালেবের ফিশারিজ থেকে দুটি তেলাপিয়া মাছ ধরায় ক্ষুব্ধ হয়ে বকাঝকা করে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেয়। এর মধ্যে প্রতিবেশী বিদেশ ফেরত একজনের কিছু কাগজ ও মোবাইল চুরি হওয়ার অপবাদ দেয় মেহেদীকে। এ নিয়ে সালিস বসালে আমার স্বামী ছেলেকে নিয়ে যায়নি। সে কারণে বাড়িতে এসে হামলা করে হত্যা করে।

ফুলবাড়ীয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুকনুজ্জামান বলেন, নিহত আব্দুল গফুর বিভিন্ন ঘটনায় তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলার চার্জশীড ভুক্ত। তার ছেলে একটি মাদক মামলা আসামী। ঘটনার সাথে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এই ঘটনার পর থেকে জড়িত ব্যক্তিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।