ত্রিশালে মহাসড়কের পাশে ময়লার স্তূপ: চরম জনদুর্ভোগ ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে মানুষ

image

You must need to login..!

Description

ত্রিশাল (ময়মনসিং) প্রতিনিধি:
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল পৌরসভা এলাকায় রাস্তার দু’পাশজুড়ে গড়ে উঠেছে ময়লার বিশাল স্তূপ। প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী ও পথচারীকে পোহাতে হচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ ও অস্বস্তিকর পরিস্থিতি, যা ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য এক চরম হুমকিতে।
সকালে কিংবা রাতে সব সময়ই ওই পথ দিয়ে চলাচলকারীদের অনেককে নাক চেপে যেতে দেখা যায়। অনেকেই আবার দুর্গন্ধে বমি করে ফেলছেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, গভীর রাতে লরি ও ভ্যানে করে ময়লা এনে ফেলা হচ্ছে সড়কের পাশে ও নদীতীরে।ফলে এলাকাটি ক্রমশই পরিণত হয়েছে এক বিশাল ‘ময়লার ভাগাড়ে’।
সবচেয়ে বড় ময়লার স্তূপটি গড়ে উঠেছে সুতিয়া নদীর তীরে, যেখানে হাসপাতাল ও আবাসিক এলাকার সন্নিকটে ময়লা ফেলার কারণে বাড়ছে জলদূষণ ও বায়ুদূষণ। এতে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হাসপাতালের রোগী, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
নিয়মিত এই মহাসড়কে যাতায়াতকারী বাসচালকরা জানান, যানবাহনের ভেতরেও দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় যাত্রীদের মাঝে বিরক্তি ও অসুস্থতা দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ আরও গুরুতর তারা বলছেন, পৌর কর্তৃপক্ষই নিয়মিতভাবে মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলার কাজে জড়িত। ত্রিশাল বাজার থেকে নওধার হয়ে সংযোগ সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে এই স্থায়ী ময়লার ভাগাড়।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ছাইফুল ইসলাম বলেন, “এই ধরনের ময়লার স্তূপ থেকে বায়ু ও পানি দূষণ হচ্ছে। এতে যক্ষ্মা, চর্মরোগ,চোখের সমস্যা এবং হজমজনিত বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এবিষয়ে ত্রিশাল পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকী উল বারী বলেন, “অর্থসংকট ও নির্ধারিত জায়গার অভাবে আমরা স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন তৈরি করতে পারিনি। তবে মহাসড়কে যেন ময়লা না ছড়ায়, সে জন্য কিছু স্থানে বেড়া দেওয়া হয়েছে।” তিনি নিজেও স্বীকার করেন যে বিষয়টি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মেজবাবুল আলম জানান, “স্থানীয় সরকারকেই ময়লা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ নিয়ে ত্রিশাল পৌরসভাকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।”
ত্রিশাল পৌরসভার এই অব্যবস্থাপনা এখন শুধু স্থানীয় বাসিন্দারই নয়, বরং প্রতিদিন হাজারো যাত্রীর জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছে। জরুরি ভিত্তিতে একটি দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই সমাধান প্রয়োজন যাতে এই দুর্গন্ধময় দুর্ভোগ থেকে জনগণ মুক্তি পেতে পারে এবং পরিবেশও রক্ষা পায়।