বিভ্রান্তি বা ভুল তথ্য প্রচার! বাড়ির সাথে সত্যজিৎ পরিবারের কোনই সম্পর্ক নেই

বিভ্রান্তি বা ভুল তথ্য প্রচার! বাড়ির সাথে সত্যজিৎ পরিবারের কোনই সম্পর্ক নেই

BMTV Desk No Comments

ন্টাফ রিপোর্টার ,  বিএমটিভি নিউজঃ

একাধিক ব্যক্তি ফেসবুকে লিখিছেন শিশু একাডেমীর ভবন নির্মাণের জন্য যে পুরাতন ভবনটি ভাঙ্গা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে এই বাড়ির সাথে সত্যজিৎ পরিবারের কোনই সম্পর্ক নেই। এ তথ্য জানিয়েছেন সুজন, ময়মনসিংহ মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলী ইউসুফ গত ১৫ জুলাই তার ফেসবুকে ওয়ালে  । তিনি   হরিকিশোর রায় রোডের এই বাড়িটি নিয়ে বেশ কয়েকদিন যাবৎ অনেকেই ভুল তথ্য দিচ্ছেন। এই বাড়িটি সত্যজিৎ রায়ের পূর্ব পুরুষের বলে ভুল তথ্য প্রচার করছেন।
প্রকৃতপক্ষে এই বাড়ির সাথে সত্যজিৎ পরিবারের কোনই সম্পর্ক নেই। তবে বাড়ির সামনে যে সড়ক “হরিকিশোর রায় রোড” তা আবার সত্যজিৎ রায়ের প্রপিতামহের নামে।
ছবির এই বাড়িটি শশীকান্ত মহারাজ তার বাংলো বাড়ি “শশীলজের” পাশেই নির্মাণ করেন তাঁর কর্মচারীদের জন্য।
যতদূর জানা যায় এখানে জমিদারের এক পদস্থ কর্মচারী থাকতেন।
পরবর্তীতে প্রখ্যাত দানবীর ও সমাজ সেবক রণদা প্রসাদ রায় ইংরেজদের কাছ থেকে ময়মনসিংহের বিদ্যুৎ কেন্দ্র বা পাওয়ার হাউজ কিনে নেন। যেটাকে আমরা বাতির কল বলি। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র কিনে নেয়ার পর তাঁর নিযুক্ত ম্যানেজারের বাস ভবন হিসেবে ব্যবহারের জন্য তিনি শশীকান্ত মহারাজের কাছ থেকে বাড়িটি লিজ নেন।
এই বাড়িতে রণদা প্রসাদের ম্যানেজর থাকতেন।
এরপর জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর এটি অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।
সরকার এই বাড়িটি বাংলাদেশ শিশু একাডেমির জন্য বরাদ্দ দেয়। দীর্ঘদিন এই বাড়িটি জেলা শিশু একাডেমির কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

এই বাড়ি এক সময় ব্যবহারের অনুপযোগী এবং ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এটিকে সরকার পরিত্যক্ত ভবন হিসেবে ঘোষণা দেয় প্রায় এক যুগেরও আগে।
এখানে নতুন করে একটি ভবন নির্মাণের জন্য অর্থও বরাদ্দ দেয়া হয়। কয়েকবার এই ভবন ভেঙে শিশু একাডেমির ভবন নির্মাণ করতে গেলে কি কি কারণে যেন এটা বারবার থেমে যায়।
সম্প্রতি এই পরিত্যক্ত ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করতে গেলে একেকজন একেক তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে।
এই ভবনের সাথে শিশু সাহিত্যিক ও প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ পরিবারের কোন সম্পর্ক নেই। তবে এই বাড়ির সামনে যে সড়ক সেই সড়কের নামকরণের সাথে সত্যজিৎ রায়ের বংশের সম্পৃক্ততা আছে।
সত্যজিৎ রায়ের বাবা হচ্ছেন প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক ও শক্তিমান ছড়াকার সুকুমার রায়। সুকুমার রায়ের বাবা তিনিও বিখ্যাত শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্র কিশোর রায়। উপেন্দ্র কিশোরের নামে নগরীর কালীবাড়িতে”কুমার উপেন্দ্র বিদ্যাপীঠ” নামে একটি স্কুল আছে।
উপেন্দ্র কিশোর রায়ের দত্তক বাবা ছিলেন হরিকিশোর রায়। হরিকিশোর রায় রোডেই তাঁদের একটা বাড়ি ছিল। সেটি এখন আর নেই। এখানে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এই রোডের শাহী মসজিদের পাশের সুউচ্চ ভবনটি যে জায়গায় সেখানেই সত্যজিৎ পরিবারের বাড়ি ছিল। এই বাড়ি তারা বিক্রি করে দেয়ার পর মুমিনুন্নিসা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা দূর্লভ খান এই বাড়ি কিনে নেন তখন এই বাড়ি নাম হয় দূর্লভ ভবন।
এখন সত্যজিৎ রায়ের পূর্ব পুরুষের জায়গায় যে সুউচ্চ ভবন আছে তার নাম “দুর্লভ ডালিয়া টাওয়ার”।
অনেকেই না বুঝে শিশু একাডেমির সেই ভবনকে সত্যজিৎ রায়ের বাড়ি বলায় বিভ্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই।##

LATEST POSTS