ময়মনসিংহ জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের ৩৮১ কোটি সাড়ে ৮২ লাখ টাকা রাজস্ব আদায়ঃ নেই সেবাগ্রহণকারীদের সুযোগ সুবিধা

ময়মনসিংহ জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের ৩৮১ কোটি সাড়ে ৮২ লাখ টাকা রাজস্ব আদায়ঃ নেই সেবাগ্রহণকারীদের সুযোগ সুবিধা

BMTV Desk No Comments

স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ

ময়মনসিংহ জেলার রেজিষ্ট্রার অফিসাধীন ১৫টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ২০২৪ সালে ৫ আগস্ট আন্দোলনসহ নানা প্রতিকূলতার মাঝেও ২০২৪ সালে ৩৮১ কোটি ৮২ লাখ প্রায় ৫৬ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। ২০২৩ সালে চেয়ে তুলনায় ২০২৪ সালে ২৪ কোটি ৫৯ লাখ ৮৩ হাজার টাকা বেশী রাজস্ব আদায় করেছে। এর মধ্যে ২০২৪ সালে ময়মনসিংহ সদর সাব রেজিস্ট্রার ১৪০ কোটি সোয়া ৮৪ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বাকী ১৪টি সাব–রেজিস্ট্রোর অফিস ২৪০ কোটি আদায় রাজস্ব আদায় করেছে। বছরে বাকী ১৪টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিস গড়ে ১৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। এই হিসেবে ময়মনসিংহ সদরে কমপক্ষে ৪/৫ টি সাব–রেজিস্ট্রার স্থাপন করা জরুরী প্রয়োজন।

ময়মনসিংহ সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসসহ ১৫ সাব রেজিস্ট্রার অফিস বিপুল রাজস্ব আদায় সত্ত্বেও রাজস্ব প্রদানকারীদের নেই কোন সুযোগ সুবিধা। নেই বিশুদ্ধ খাবার ব্যবস্থা নেই ওয়াশ রুম। ফলে প্রস্রাব –পায়খানা নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে বৃদ্ধ, মা শিশু চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে ঘন্টার পর ঘন্টার দাড়িয়ে থেকে শিশুর মা তার সন্তানকে দুগ্ধ করতে পারছে না।

জেলায় সদর সহ মোট ১৫টি সাব –রেজিস্ট্রার রয়েছে। প্রত্যকটি মুল্যবান দলিলপত্র সংরক্ষণের জন্য যথেষ্ট গুদাম বা মালখানা নেই। সংরক্ষণের অভাবে অনেক নষ্ট হচ্ছে। ১৫টি সাব-রেজিস্ট্রর পরিদর্শনে জেলা রেজিস্ট্রারের নেই যানবাহন ।

সদর সাব–রেজিস্ট্রি অফিসের সাব –রেজিস্ট্রার জাহিদ হাসান বলেন, শত বছরের পুরানো একটি গুদামে মুল্যবান দলিল সংরক্ষণ করা হয়। ছাদ ডেমেজ হয়ে ছাদ ছুয়ে পানি পড়ে, মুল্যবান কাগজপত্র নষ্ট হচ্ছে। জরুরী ভিত্তিতে জেলা সদরে নতুন গুদাম নির্মাণ প্রয়োজন। অন্যথায় বড় ধরনের ক্ষতির আশংকা রয়েছে। এছাড়া বড় অংকের রাজস্ব আদায় হলে সেবা গ্রহিতাদের জন্য নেই কোন সুযোগ সুবিধা।

দলিল করতে আসা আয়েশা খাতুন নামে বসার জায়গা না পাকা রাস্তা উপর শিশু বাচ্চা নিয়ে বসে আছেন কখন ডাক পড়ে এই অপেক্ষায়।

হালুয়াঘাটের সাব-রেজিস্ট্রার গোলাম সরোয়ার বলেন, পুরাতন কোর্ট ভবনে অফিসের কাজ চলছে বুষ্টির আসলে ছাদ ছুয়ে পানি পড়ে। রাজস্ব দেয় জমি ক্রেতা বিক্রেতারা তাদের কোন বসার জায়গা নেই ওয়াশ রুম নেই। গফরগাঁও সাব-রেজিস্ট্রার নাফিসা নাওয়াজ নানা সমস্যা কথা তুলে ধনের।ধোবাউড়া সাব-রেজিস্ট্রার আজমেরি নির্ঝর বলেন ২০২১ সালে নিজস্ব ভবন নির্মাণ শেষ করে বর্তমান ডমেজে হয়ে যাচ্ছে ভবনের বিভিন্ন অংশ। নাইট গার্ড নেই। গফরগাঁও কান্দিপাড়া সাব রেজিস্ট্রার স্বপ্না বিশ্বাস বলেন, আমার অফিসে কোন সমস্যা নেই। তারাকান্দা সাব-রেজিস্ট্রার রহমতউল্লাহ লতিফ, বলেন নিজস্ব কোন ভবন নেই । ভাড়া বাড়িতে কাজ চালানো হচ্ছে। পাবলিক টয়লেট নেই। স্থায়ী ভবন নির্মাণ প্রয়োজন। পাগলা সাব-রেজিস্ট্রার এম নাফিয বিন যামান বলেন, নাইট গাড, অফিস সহকারী পদ আছে জনবল নেই। মহরার পদ অন্য অফিসে ৩জন থাকলেও আছে ১টি । সোজা কথা জনবলের সংকট রয়েছে। নিজস্ব ভবন নেই।

মাসকান্দা দলিল করতে আসা জামাল উদ্দিন বলেন, জমি ক্রেতা বিক্রেতা যারা রাজস্ব দেয় তাদেরকে দীর্ঘ সময় বসে অপেক্ষা করতে বসার কোন ব্যবস্থা নেই শৌচাগার, নে্ই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা । রাজস্ব যারা দেন তাদের মধ্যে বিশেষ করে বসার ব্যবস্থা নেই। বিশেষ করে বৃদ্ধ পুরুষ মহিলা ও মা শিশুদের নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দেশের নাগরিক হিসেবে নুন্যতম সুযোগ সুবিধা নেই। শহরের আকুয়া থেকে আগত জানান, খাবার পানি, বসার জায়গা, বিশেষ করে শিশু দুগ্ধদানের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

মুক্তাগাছা সাব-রেজিস্ট্রার এস এম শফিউল বারী, ফুলবাড়ীয়া সাব-রেজিস্ট্রার রাফায়েল ফাতেমী, ত্রিশাল সাব-রেজিস্ট্রার মোঃ ওমর ফারুক, ভালুকার সাব-রেজিস্ট্রার আনোয়ারুল হাসান, গফরগাও সাব-রেজিস্ট্রার নাফিসা নাওয়ার, নান্দাইল সাব-রেজিস্ট্রার, শেখ আবদুস সামাদ আজাদ, ঈশ্বরগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রার কামরুজ্জামান কবির, গৌরীপুরের সাব-রেজিস্ট্রার মোঃ রফিকুল ইসলাম ও মুক্তাগাছা সাব-রেজিস্ট্রার শেখ নাসিমুল আরিফসহ সবাই বলেন, দলিল ক্রেতা-বিক্রিতাদের চরম দুর্ভোগ গোহাতে বিশুদ্ধ খাবার পানি, শৌচাগারের অভাবে।

ময়মনসিংহ জেলা রেজিস্ট্রার প্রতীক কুমার সাহা বলেন যেসব সমস্যা সম্পকে জানালাম উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব। মানুষের দুর্ভোগ কমতে সদরে আরো ৪ সাব-রেজিস্ট্রার করা সময়ের দাবী। জেলা রেজিস্ট্রারের গাড়ি বিষয়ে বলেন, দুর্গম এলাকায় সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে পরিদর্শনে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। ১৫টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিস রয়েছে জেলায়। বাসে, রিক্সায় অথবা মোটর সাইকেলে পরিদর্শন করতে হয়। প্রতিদিন একটি সাব-রেজিস্ট্রার পরিদর্শন করলে ১৫ দিন চলে যায়। নিয়মিত পরিদর্শনে বিঘ্ন ঘটে। এখন আমি যেখানে অনিয়মের খবর পায় সেখানেই ছুটে যায়। ###
মতিউল আলম

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *