এনায়েতুর রহমান, বিএমটিভি নিউজঃ
ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় অতিবৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে অন্তত ৮০০ একর ফসলি জমি। আহাজানি খালের উপর একটি স্লইস গেইট আটকে মাছ শিকার করায় এসব জমির পানি নিস্কাশন হচ্ছে না।কৃষকরা ফসল রক্ষার দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের পীরগঞ্জ, ভেহিবিল, মহিষতারা, সেনবাড়ী কমলাপুর, কলাগোপা, বনবাড়ীয়া, দাওসা, দূর্গাপুর ও কমলাপুরসহ চারটি বিল ও মুক্তাগাছার একটি বিলের পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি খাল রয়েছে। কুশমাইল ইউনিয়নের আহাজানি খাল দিয়ে ওই ৬ গ্রামের পানি ও বিলগুলোর পানি নিস্কাশন হয়। তবে, আহাজানি খালের স্লুইস গেইট আটকে মাছ শিকার করে আশপাশের লোকজন। গ্রামবাসী বাধা দিলে ওই খালের আশপাশের লোকজন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে মারধর করতে আসে। আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ বছর আগে ওই খালের উপর বাধ নির্মাণ করেছিল স্থানীয় লোকজন। খাল আটকে বাধ নির্মাণ করায় মামলা পর্যন্ত গড়ায়।
স্থানীয় কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার এবং অনেক কৃষকের জমি ডুবে আছে। পানি কবে নামবে জানি না। চিন্তায় আছি, এই বছর আমন ধান ঘরে তুলতে পারব কিনা তাও বলতে পারছি না।
কৃষক শাহজাহান মিয়া বলেন, স্লুইস গেটের রক্ষণাবেক্ষণে আগে যিনি দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। তারপর কেউ ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করে না। স্থানীয়রা স্লুইস গেইটের পানি আটকে মাছ ধরার কারণে এই জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। এতে প্রায় ৬ গ্রাম ৫ বিলের ৮০০ একব ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশন না করা হলে জমিতে লাগানো রুপা আমন ধানের চারা রক্ষা করা যাবে না।
কৃষক আবু তাহের বলেন, ঋণ করে আমন ধান লাগিয়েছি, আমার সম্পূর্ণ জমির ধান গাছ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশন করা প্রয়োজন। আমাদের কৃষকদের বিশাল ক্ষতি হয়ে যাবে।
কৃষক নুরুন্নবী বলেন, স্লুইচ গেট ঠিকমতো না খোলার কারণে দুই বছর ধরে আমন ধান নষ্ট হচ্ছে। স্থায়ীভাবে এর বিহিত করতে না পারলে কৃষি উৎপাদনে ভয়াবহ ক্ষতি হবে। আমরা চাই এর একটি দ্রুত সমাধান হোক।
পুটিজানা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমি নিজে সেখানে গিয়েছিলাম। অল্প অল্প করে স্লুইস গেট দিয়ে পানি ছাড়ায় অনেক জমির ধান গাছ পানির নিচে ডুবে গেছে। দ্রুত ফসলি জমির পানি নিষ্কাশন করা না হলে কৃষক বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।
এবিষয়ে ফুলবাড়ীয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে কৃষকদের পক্ষ থেকে একটি লিখত অভিযোগ পেয়েছি। আগামীকালই কৃষকের ফসল রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।