স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
রাজধানীর কাওরান বাজারে দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ হয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল থেকে এই হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। রাত ১২টার আগে প্রথমে প্রথম আলো ভবনে ভাঙচুর শুরু করেন বিক্ষুব্ধরা। তারা ভবনে প্রবেশ করে সেখানকার নথিপত্র ও আসবাব বাইরে ফেলে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। ভবনে চালানো হয় ভাঙচুর। এক পর্যায়ে চারতলা এই ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

রাত পৌনে তিনটায় এ রিপোর্ট লেখা সময় ওই ভবনে আগুন জ্বলছিল। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটকে আগুন নিভাতে দেখা যায়। আগুনে ভবনটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথম আলোর ওই ভবনের পাশের একটি ভবনে পত্রিকাটির বার্তা বিভাগ। সেখানে থাকা কর্মীরা নিরাপদে সরে গেলেও পত্রিকাটির দ্বিতীয় সংস্করণ আর প্রকাশ হয়নি। এছাড়া হামলার শুরুর পর রাতে অনলাইন বিভাগও আর সচল দেখা যায়নি। ওদিকে প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলার পর বিক্ষুব্ধ লোকজন কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউতে অবস্থিত ডেইলি স্টার ভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ শুরু হয়। বিক্ষুব্ধরা প্রথমে পত্রিকাটির নিচ তলায় ভাঙচুর চালান। পরে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। আগুন দেয়ার কারণে ভবনে পত্রিকাটির অনেক কর্মী আটকা পড়েন। ভাঙচুর করতে ভবনে প্রবেশ করা কয়েজন লোকও সেখানে আটকা পড়েন। পত্রিকার কয়েকজন কর্মী ভবনে আটকা পড়ে উদ্ধারের আকুতি জানান। তারা ফেসবুকেও নিজেদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এক পর্যায়ে আগুন নেভাতে চেষ্টা চালান ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষুব্ধদের শান্ত করতে চেষ্টা চালান। তাদের চেষ্টায় এক পর্যায়ে হামলাকারীরা পিছু হটলে ফায়ার সার্ভিস ও আশপাশের লোকজন উদ্ধারের কাজ শুরু করেন। রাত আড়াইটার দিকে ভবনে থাকা লোকজনকে নিচে নামানো হয়। তখনও বিক্ষুব্ধ লোকজন সড়কে অবস্থান নিয়ে ছিলেন। বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কারণে সামনের প্রধান সড়কে দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকে। হামলার কারণে ডেইলি স্টারও দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করতে পারেনি। এছাড়া পত্রিকাটির অনলাইন সংস্করণ রাতে কোন আপডেট দিতে দেখা যায়নি। কাওরান বাজারে দুটি মিডিয়ার কার্যালয়ে হামলার সময় প্রথমে পুলিশ সদস্যদের দেখা যায়নি। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা হাজির হলেও ব্যাপক সংখ্যক উপস্থিতির কারণে হামলা, ভাঙচুর ঠেকাতে তাদের তেমন কোনো ভুমিকা দেখা যায়নি। ওদিকে রাত তিনটায় এ রিপোর্ট লেখার সময় কাওরান বাজার থেকে শাহবাগমুখি সড়কে ছাত্র-জনতাকে বিক্ষোভ মিছিল করতে দেখা যায়। শাহবাগ ছিল লোকারণ্য। হাজার হাজার মানুষ হাদি হত্যার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিলেন।