স্টাফ রিপোর্টার, বিএমটিভি নিউজঃ
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় নিজ প্রতিষ্ঠানে লাঞ্ছিত হয়েছেন ভূটিয়ারকোণা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদ। তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ ঘটে যাওয়া ঘটনায়ে আলোচনা-সমালোচনার উঠেছে।ভিডিওতে দেখা যায়, ধেরুয়া কড়েহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন ভূটিয়ারকোণা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদকে প্রতিষ্ঠানের বাইরে বের করে দিচ্ছেন। এসময় আরও কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কলেজের নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গত বছরের জুলাই থেকে অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের একাংশ। পরে ৫ আগস্টের পর তাকে পদ থেকে সরিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে ধর্ম শিক্ষক সাজেদুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ নিয়ে এলাকায় দুটি পক্ষ তৈরি হয়। এরপর গত বছরের ১৭ অক্টোবর স্থানীয় নেতাদের পরামর্শে সাজেদুল ইসলাম দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান ও গোলাম মোহাম্মদকে আবার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেন। তবে এরপর থেকে একটি পক্ষ তাকে কলেজে যেতে বাধা দেয় ও তার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়।বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় লোকজন। ঘটনার পরদিন শুক্রবার ভূটিয়ারকোনা আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের সামনে এবং বাজার এলাকায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়। এসময় গৌরীপুর পৌর বিএনপির সদস্যসচিব সুজিত কুমার দাস, অচিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জায়েদুর রহমান, ব্যবসায়ী আবুল কালাম, ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মো. আবদুর রশিদসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন। তারা এ ন্যক্কারজনক ঘটনার নিন্দা জানিয়ে শিক্ষক আনোয়ার হোসেনসহ জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদ বলেন, আমি বৈধভাবে আমার দ্বায়িত্ব পালন করছি। অথচ কয়েকজন শিক্ষক আমাকে দ্বায়িত্ব থেকে সরাতে তৎপরতা চালায়। গত বছরের ৫ আগস্টের পর বিরোধ সৃষ্টি করে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে কলেজ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন কলেজে এসে আমাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বের করে দেয়। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই আনোয়ার হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকেও অভিযুক্ত করে থানায় একটি অভিযোগ করেছি।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।তবে ধর্ম শিক্ষক সাজেদুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতির কারণে আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়েছিল। আবারও পূর্বের অধ্যক্ষকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছি। স্যারের সঙ্গে ঘৃণিত কাজটি যারা করেছে তাদের বিচার দাবি করছি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, ভিডিওটি আমার নজরে এসেছে। শিক্ষক আনোয়ার হোসেন স্কুল চলাকালে কীভাবে এ ঘটনায় জড়ালেন, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দিদারুল ইসলাম বলেন, অধ্যক্ষ গোলাম মোহাম্মদ থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।